নামায পড়ার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা

ধানের উচ্চ ফলনশীল জাত সম্পর্কে জানুনআমরা সবাই জানি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া মুসলিমদের জন্য ফরজ। কিন্তু নামাজ পড়ার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা সম্বন্ধে অনেকেই অবগত নই। মুসলমানরা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নামাজ পড়ে থাকে কিন্তু বিজ্ঞান প্রমাণ করছে নামাজ পড়লে আমাদের বেশ কিছু শারীরিক ও মানসিক উপকার সাধিত হয়।
নামায পড়ার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা
এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা আরো আলোচনা করেছি নামাজ পড়ার শারীরিক উপকারিতা মানসিক উপকারিতা ও সামাজিক উপকার সম্বন্ধে। সুতরাং পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভূমিকা


ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে নামাজ হল একটি। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হয়। সারা বিশ্বের মুসলিমদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছে। মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় বা আল্লাহকে খুশি করতে এই নামাজ আদায় করে থাকে। এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছাড়াও আরো বেশ কিছু সময়ে বেশ কিছু রকমের নামাজ আছে।
নামাজ আদায় করার ফলে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করে আবার বিজ্ঞান প্রমাণ করছে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে তাদের বেশ কিছু শারীরিক ও মানসিক উপকার হয়। নামাজ পড়ার জন্য আমরা পাঁচ বার ওযু করি যার ফলে আমাদের দেহের মূল্যবান অংশগুলো পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত থাকে থাকে। সুতরাং নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার ফলে আমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারছি এবং আরো পাচ্ছি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শারীরিক উপকারিতা


নামাজ আমাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য একটি কার্যকরী পদক্ষেপ। ওযু করা থেকে শুরু করে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত প্রতিটি কাজই মানুষের সুস্থতার সহিত সম্পর্কিত। নামায পড়ার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা এবার বিজ্ঞানের গবেষণায়ও উঠে এসেছে। ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ এবং এই ফরজ লংঘন করলে কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে।

অথচ নামাজ আদায় করলে শারীরিক ও মানসিক উপকার সাধিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণায় এই তথ্যই উঠে এসেছে। নামায পড়ার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের বিং হ্যম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক জানিয়েছেন নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে মানুষ সুস্থ থাকতে পারে। এই গবেষণায় বলা হয় নিয়মিত নামাজ পড়লে ব্যাক পেইন কমে যায় ও ঝিম ধরা শরীরে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক হয়।

নামাজ পড়ার মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ কম্পনও কমে যায়। গবেষকরা বলছেন যখন কেউ যথাযথভাবে রুকু করে তখন তার পিঠ সমান্তরাল ভাবে থাকে নামাজের রুকু করার সময় পিঠ পায়ের উরু ঘাড়ের পেশিগুলো সম্পূর্ণ সম্প্রসারিত হয় যার ফলে রক্ত প্রবাহ যথাযথ থাকে। শরীরের উপরের অংশের রক্তের প্রবাহ স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরে আসে।
সেজদা করা সম্পর্কে গবেষকরা বলছেন মানুষ যখন নামাজে সেজদা করে তখন তার শরীরের হাড়ের জোড়া গুলো নমনীয় হয় হাড়ের উপর যে চাপ পড়ে তা শিথিল হয় এবং জমিনে মাথা রাখার ফলে মস্তিতে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হয় উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়। ধীরস্থিরভাবে সিজদা করার মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বেড়ে যায় শারীরিক ভারসাম্য ফিরে আসে শ্বাস-প্রশ্বাসে স্বাভাবিক গতি ফিরে পাওয়া যায় তাই নামাজ মানুষের সুস্থতার জন্য অনেক উপকারী।

  • কিশোর বয়স থেকেই যারা নামাজ আদায় করে তাদের মন পবিত্র থাকে এবং নানা রকম অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারে।
  • নিয়মিত নামাজ আদায় করার মাধ্যমে মানুষের জীবনের শক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • শুধুমাত্র নিয়মিত নামাজ আদায় করার মাধ্যমে চোখের যত্ন নেওয়া সম্ভব। পাঁচ বার ওযু করার ফলে পাঁচবার চোখ ধৌত করা হয়। যার ফলে অনেক নামাজ আদায় করে মানুষের দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ থাকে।
  • একবার ওযু করার সময় ৩বার মুখমণ্ডল ধৌত করা হয় অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে একদিনে ১৫ বার মুখমন্ডল ধৌত করা হয়। যার ফলে আমাদের মুখের ত্বক উজ্জ্বল হয় এবং মুখের দাগ অনেক কম হয়।
  • নামাজ আমাদের দেহের কাঠামো বজায় রাখে। ফলে আমাদের শারীরিক বিকলাঙ্গতা লোপ পায়।

নামাজ পড়লে কি চেহারা সুন্দর হয়


প্রচলিত একটা কথা আছে ফজরের নামাজ পড়লে চেহারা সুন্দর হয়। নামাজ হচ্ছে আল্লাহর ইবাদত এবং এই এবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে একটা সম্পর্ক সৃষ্টি হয় যার ফলে মানুষের মাঝে আত্মবিশ্বাস ও প্রশান্তি বিরাজ করে। ফজরের ফজরে নামাজ পড়ার পর মানুষের শরীরে কিছু হরমোন মিশ্রিত হয় যা তাদের শারীরিক ও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

ফজরের নামাজ পড়ার ফলে মানুষের শরীরে শক্তি ও কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় মেজাজ ভালো থাকে মানসিক চাপ কমে যায়। নিয়মিত ফজরের নামাজ আদায় করার ফলে মানুষ এক রকম মানসিক প্রশান্তি লাভ করে যা তা ব্যক্তিত্বকে আরো আকর্ষণীয় নিয়ে করে তোলে।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মানসিক উপকারিতা

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য ফরজ করেছেন। আমরা যখন নিয়ম মেনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি তখন আমরা খারাপ কাজ থেকে নিজেদের বিরত রাখি। নামাজে যখন আমরা একসঙ্গে একত্রে দাঁড়ায় এবং একটি কেন্দ্রে মনোযোগ স্থির থাকে তখন আমাদের মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত নামাজ আদায়ের ফলে আমাদের মন মানসিকতার অসাধারণ পরিবর্তন সাধিত হয়।

একমাত্র নামাজের মাধ্যমে আমরা সৃষ্টিকর্তার কাছে আমাদের অভাব অভিযোগ দুঃখ কষ্ট চাওয়া পাওয়া বিষয়ে বলতে পারি যা আমাদের এক প্রকার মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়। নামাজের সময় মানুষের মন পবিত্র থাকে ফলে অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায় যা আমাদের শারীরিক সুস্থতারই বহিঃপ্রকাশ।

ব্যক্তির জীবনে শৃঙ্খলা ফিরে আসে এবং ব্যক্তি অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখে। নিয়ম করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে পারলে মানুষের মাঝে নিয়মানুবর্তিতা গড়ে ওঠে যা তাদের বাস্তব জীবনে অনেক কাজে লাগে।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে কি হবে


নামাজ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মহান আল্লাহতালা বারবার নামাজের দিয়েছেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে। কুরআনে ৮২ বার নামাজ শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে নামাজ কত গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝা যায়। তাই আমাদের রাসুল ঈমানের পরে নামাজকে স্থান দিয়েছেন।

নামাজ হচ্ছে ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সঠিক নিয়মে আদায় করবে আল্লাহ তাকে পাঁচটি পুরস্কার সম্মানিত করবেন।

  • তার অভাব দূর করবেন
  • কবরের আজাব থেকে মুক্তি দিবেন
  • আমলনামা ডান হাতে দিবেন
  • বিজলির নেই পুলসিরাত পার হতে পারবে
  • আর বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে

নামাজের সামাজিক উপকার


মানুষ সামাজিক জীব। তারা একটা সমাজে বসবাস করে। প্রাত্যহিক জীবনে প্রয়োজনের তাগিদে আমরা কোন না কোন কাজে ব্যস্ত থাকি। একে অপরের সঙ্গে সেভাবে দেখা-সাক্ষাৎ হয় না কিন্তু আমি যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি তাহলে সেখানে অনায়াসে দেখা হয়। একে অপরের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা যায়। কোন সমস্যায় পড়লে সবাই মিলে তার সমাধান করা যায়।

নামাজ মানুষকে বিভিন্ন রকম অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। নিয়মিত নামাজ আদায় করার ফলে আল্লাহর সঙ্গে তার বান্দাদের এক গভীর সম্পর্কের সৃষ্টি হয় এবং মানুষ এক আত্মিক দীক্ষা লাভ করে। এই দীক্ষা মানুষকে সবসময়ই খারাপ কাজ থেকে খারাপ কাজ করার প্ররোচনা থেকে নিজেকে রক্ষা করে।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার ফলে মানুষের মনে আল্লাহ ভীতি ও নিজের বিভিন্ন কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে এ অনুভূতি তৈরি হয়। আর এই অনুভূতি যখন কাজ করে মানুষের মনে তখন সে রাতের অন্ধকার হোক অথবা নির্জনতা হোক কোনো খানে সে অপরাধ করতে পারে না। খারাপ কাজের সাথে নিজেকে জড়িত রাখতে পারেনা।

যে দীক্ষা বা নীতি আমাদের খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে সেই দীক্ষা বা নীতি প্রতিনিয়ত জাগ্রত রাখার জন্য নিয়মিত নামাজ আদায় করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত নামাজ আদায়ের ফলে আমাদের চিন্তা ভাবনায়ও পরিবর্তন আসে। আমরা আমাদের চিন্তা ভাবনাতেও খারাপ কাজের বিষয়টা আনতে পারে না কারণ সৃষ্টিকর্তা সবকিছুই দেখছেন সবকিছুই জানেন।


লেখকের মন্তব্য


পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মহান সৃষ্টিকর্তার অনেক বড় নিয়ামত আমাদের জন্য। সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের সবচেয়ে বড় মাধ্যম হচ্ছে নামাজ। শারীরিক ও মানসিক সন্তুষ্টির উপায় হচ্ছে নামাজ। সুতরাং সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে আমাদের মনোযোগের সহিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা উচিত। 

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের ফলে প্রাপ্ত শিক্ষা সবসময়ই আমাদের কে দৈনন্দিন খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে। তাই আমরা সহজেই স্বীকার করি নামাজ পড়ার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা এবং নামাজ থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা যা আমাদের জীবনের চলার পথের পাথেয়।

প্রিয় পাঠক, নামাজ পড়ার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা সম্পর্কে লিখিত আমাদের এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে বা উপকারে আসে তবে পরিচিতদের মাঝে পোস্টটি শেয়ার করে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url