আধুনিক পদ্ধতিতে বস্তায় আদা চাষ কেন লাভজনক জানতে পড়ুন
ক্যাপসিকাম চাষে কেন সর্বাধিক লাভবান হবেন জানুনকৃষি খাতকে উন্নত করার জন্য বিভিন্ন আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষি এবং কৃষক যেন লাভবান হয় সেই দিকটাই বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে। বস্তায় আদা চাষ তেমনি একটি আধুনিক পদ্ধতি এবং লাভজনক।
আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে আলোচনা করেছি আধুনিক পদ্ধতিতে বস্তায় আদা চাষ কেন
লাভজনক সে সম্পর্কে সুতরাং পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকাঃ
আমাদের কৃষিকে সমৃদ্ধ ও উন্নত করার জন্য কৃষিবিদগণ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন আধুনিক
পদ্ধতির উদ্ভাবন করে যাচ্ছেন। বস্তায় আদা চাষ তেমনি একটি আধুনিক পদ্ধতি। এবং এটি
যথেষ্ট লাভজনক। বস্তায় আদা চাষ লাভজনক হওয়ায় এটি কৃষকদের মাঝে যথেষ্ট সাড়া
ফেলেছে।
আধুনিক পদ্ধতিতে বস্তায় আদা চাষ করতে নির্দিষ্ট কোন কৃষি জমির দরকার হয় না। এটি
বাড়ির আঙ্গিনা, ছাদ, পতিত জমি ও অনাবাদি জমিতে চাষ করা যায়। বস্তায় চাষ করার
ফলে এর উৎপাদন খরচও অনেক কম হয়।
আধুনিক পদ্ধতিতে বস্তায় আদা চাষঃ
বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতিতে বস্তায় আদা চাষ বেশ লাভজনক এবং জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে
কৃষকদের মাঝে। আদার দাম বৃদ্ধি এবং যেকোনো পড়ে থাকা জমিতে এটি চাষ করা যায়
বিধায় আদা চাষের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পারিবারিক চাহিদার পাশাপাশি
বাণিজ্যিকভাবেও এটি চাষ করা হচ্ছে। চাষ পদ্ধতি সহজ ও কম পরিচর্যায় ভালো ফলন
পাওয়া যায় বিধায় বস্তায় আদা চাষ বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে।
বস্তার জন্য মাটি তৈরির প্রক্রিয়াঃ বস্তায় আদা চাষ করার জন্য আমরা
সিমেন্টের বস্তা অথবা অন্য কোন বস্তা ব্যবহার করতে পারি। তবে খেয়াল রাখতে হবে
আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ কেজি মাটি ধরে এরকম বস্তা নিতে হবে। বস্তায় আদা চাষ করার
জন্য নিম্নে বর্ণিত উপাদানগুলো একত্রিত করে আদা রোপনের ১৫ থেকে ২০ দিন পূর্বেই
পালা/ ডিবি করে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে যাতে বাতাস প্রবেশ করতে না
পারে।
প্রতি বস্তায় উল্লেখিত পরিমাণে মাটি, রাসায়নিক সার ও জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।
আদার ফলন ভালো পেতে জমির উর্বরতার উপর নির্ভর করে প্রতি বস্তায় ১০ থেকে ১২ কেজি
মাটি, ভার্মি কম্পোস্ট ২ কেজি, শুকনো গোবর ৫ কেজি, টিএসপি ২০ গ্রাম, এমওপি ৭.৫
গ্রাম, ছাই এক কেজি, কার্বোফুরান/ কারটাপ ১০ গ্রাম, দস্তা বা জিংক ৫ গ্রাম, এবং
বোরন ৫ গ্রাম মিশিয়ে নিতে হবে।
মিশ্রণ তৈরীর সময় মাটি, শুকনো গোবর, ভার্মি কম্পোস্ট, ছাই, টি এসপি, কার্বফুরান,
জিংক এবং বোরণ একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে এবং প্রতি বস্তায় আনুমানিক ১৫ থেকে ২০
কেজির এই মিশ্রণ নিতে হবে। বস্তায় আদা লাগানোর পূর্বে তৈরি কৃত মিশ্রণ এমনভাবে
ভরাট করতে হবে যেন বস্তার উপরের দিকে ১ থেকে ২ ইঞ্চি ফাঁকা থাকে। বস্তায় আদা
চাষে বস্তা প্রতি ২৫ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। তবে এই খরচ কোন কোন
ক্ষেত্রে কিছুটা কম আবার কোন ক্ষেত্রে কিছুটা বেশি হতে পারে।
বস্তা সাজানোর পদ্ধতিঃ বস্তা সাদা সাজানোর জন্য তিন মিটার চওড়া ও সুবিধা
মত দৈর্ঘ্য নিয়ে বেড তৈরি করতে হবে। একটি বেড থেকে অন্য বেডের মাঝখানে ৬০
সেন্টিমিটার ড্রেন রাখতে হবে। ড্রেনের মাটি বেডের উপর দিয়ে বেডকে উঁচু করতে হবে
যাতে বৃষ্টির পানি জমাট বেঁধে না থাকে।প্রতি বেডে দুইটি শারি এমনভাবে তৈরি করতে
হবে যাতে একটি শারি থেকে আরেকটি শারির দূরত্ব ১ মিটার থাকে। প্রতি সারিতে ৮/১০
ইঞ্চি পর পর পাশাপাশি দুইটি বস্তা স্থাপন করতে হবে।
আদা রোপনের সময় ও রোপণ পদ্ধতিঃ এপ্রিল থেকে মে মাস অর্থাৎ চৈত্র মাস থেকে
বৈশাখ মাস পর্যন্ত আদা লাগানো যায়। তবে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ আদা লাগানোর
উপযুক্ত সময়। বীজ বস্তায় লাগানোর পূর্বে বীজ শোধন করে নেয়াটা খুব জরুরী একটি
বিষয়। বস্তায় আদা রোপনের পূর্বে ২ গ্রাম অটোস্টিন/ প্রভেক্স ২ প্রতি লিটার
পানিতে মিশিয়ে এক কেজি আদা বীজ ১ ঘন্টা ডুবিয়ে রাখতে হবে।
এরপর ভেজা আদা পানি থেকে তুলে ছায়াযুক্ত স্থানে শুকিয়ে বস্তায় রোপন করতে হবে।
প্রতি বস্তায় ৪০ থেকে ৫০ গ্রামের একটি বীজ মাটির ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি গভীরে লাগাতে
হবে। বীজ লাগানোর পর মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। বীজ যদি ছোট হয় তবে তিনটি বীজ
একটি বস্তায় লাগানো যেতে পারে।
আন্তঃ পরিচর্যা ও সার প্রয়োগঃ বস্তায় আদা চাষ করলে তেমন আগাছা হয় না।
যদি আগাছা দেখা দেয় তবে সেটি নিড়ানি দিয়ে পরিষ্কার করে দিতে হবে। এছাড়া
পরবর্তীতে সার দেয়ার সময় গাছের গোড়া আলগা করে দিতে হবে এবং গাছের গোড়া থেকে
দূরে সার প্রয়োগ করে খেতে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। যদি বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক
থাকে তবে শেজ দেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
আর দৃষ্টিপাত স্বাভাবিক না থাকলে ঝাজরি দিয়ে হালকা হবে সেচ দেয়া যেতে পারে। সে
দেয়াটা নির্ভর করে আবহাওয়ার ওপর। বস্তায় আদা চাষ করলে রাসায়নিক সার তিন
কিস্তিতে দিতে হয়। প্রথম কিস্তি আনুমানিক ৫০ তম দিনে, দ্বিতীয় কিস্তি ৮০তম
দিনে, তৃতীয় কিস্তি ১১০ তম দিনে। প্রথম কিস্তিতে বস্তা প্রতি ইউরিয়া সার ১০
গ্রাম, ডিএপি ৫ গ্রাম হারে প্রয়োগ করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ নিয়মিত শষা খেলে শারিরীক যে উপকার পাবেন
দ্বিতীয় কিস্তিতে অর্থাৎ ৮০ তম দিনে এমওপি সার ৩.৭৫ গ্রাম এবং ইউরিয়া সার ৫
গ্রাম বস্তা প্রতি প্রয়োগ করতে হবে। তৃতীয় কিস্তি অর্থাৎ শেষবারের মতো বস্তা
প্রতি ইউরিয়া সার ৫ গ্রাম, ডিএপি সার ৫ গ্রাম এবং এমওপি সার ৩.৭৫ গ্রাম প্রয়োগ
করতে হবে। রাসায়নিক সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই তা গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করা
যাবে না একটু দূর দিয়ে সার দিয়ে ভালোভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
রোগবালা ও দমন পদ্ধতিঃ খোলা মাঠের চেয়ে বস্তায় আদা চাষ তুলনামূলক সুবিধা
জনক। আদা চাষে কন্দ পচা রোগ বেশি মারাত্মক। বর্ষাকালে এই রোগের লক্ষণ দেখা যায়।
প্রাথমিকভাবে গাছের পাতার প্রান্ত ভাগে হলুদ ভাব দেখায় এবং পর্যায়ক্রমে তা
পাতার কিনারা ও পত্রফলকের দিকে বিস্তার লাভ করে। গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায় এবং
তা ঝিমিয়ে পড়ে।
পচনের ফলে কন্দ নরম হয়ে অভ্যন্তরীণ টিস্যু সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে যায়।
আক্রান্ত রাইজোম থেকে এক ধরনের গন্ধ বের হয়। কোন গাছে যদি পচন ধরে তবে সে
বস্তাটি আলাদা করে রাখাই ভালো যেন পচন অন্য কোন গাছে না ছড়ায়। যে গাছে পচন
লেগেছে সেটি দূর করার জন্য রিডোমিল গোল্ড/ প্রভেক্স ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে
মিশিয়ে গাছটিতে স্প্রে করা যেতে পারে। বাড়ন্ত গাছে আরও একটি সমস্যা দেখা দিতে
পারে সেটি হচ্ছে পাতা খেকো পোকা।
এই পাতা খেকো পোকা অনেক সময় ব্যাপক ক্ষতি করে বা তার এর ফলে গাছের সালোকসংশ্লেষণ
হ্রাস পায় এর ফলে ফলন কমে যায়। পাতা খেকো পোকা দূর করার জন্য বিকেল বেলায় ০.৫%
হারে মার্শাল প্রতি লিটার হারে ডাস্টবার্ন বা সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের ওষুধ স্প্রে
করতে হবে। পাতা খেকো পোকা দমনে বিকেলবেলা স্প্রে করায় উত্তম। তাছাড়া আরও কিছু
গুরুতর সমস্যা দেখা দিলে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
ফসল সংগ্রহ ও ফলনঃ সাধারণত জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মাসে বস্তা থেকে আদা
সংগ্রহ করা হয়। আদা যখন পরিপক্কতা লাভ করে তখন আধার গাছ ক্রমশ হলুদ হয়ে শুকাতে
শুরু করে। এ সময়ে বস্তা থেকে আদার গাছ তোলে মাটি ছেড়ে শিকড় পরিষ্কার করে
সংরক্ষণ করা হয়। আধুনিক এই পদ্ধতিতে বস্তায় আদা চাষ করে ঠিকমতো সার ব্যবস্থাপনা
ও পরিচর্যা ঠিক রাখলে প্রতি বস্তা ১ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত আদার ফলন পাওয়া যায়।
বস্তায় আদা চাষ কেন লাভজনকঃ
মসলা জাতীয় ফসল হিসেবে আদার বেশ গুরুত্ব রয়েছে। আদার বেশ কিছু ভেষজ গুণাবলীও
রয়েছে। বাংলাদেশের যে পরিমাণ আদা উৎপাদিত হয় তা আমাদের চাহিদা পুরন না হাওয়ায়
বিদেশ থেকেও আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে ২.৮৮ লক্ষ মেট্রিক
টন আদা উৎপাদিত হয়। যা দেশের চাহিদার ৪.৮১ লক্ষ্য মেট্রিক টন এর তুলনায় খুবই
নগণ্য।
আদা কম উৎপাদন হওয়ার মূল কারণ হলো আদা চাষের উপযোগী জমির অভাব এবং কন্দ পঁচা
রোগের ব্যাপক আক্রমণ। কন্দ পচা রোগের জন্য আদার ফলন ৫০-৮০ ভাগ পর্যন্ত কম হতে
পারে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, আবাসনের জন্য ঘরবাড়ি, কলকারখানা তৈরির জন্য দিন দিন
আবাদি জমি কমে যাচ্ছে।
দিন দিন আবাদি জমি কমে গেলেও আধুনিক পদ্ধতিতে বস্তায় আদা চাষ করতে নির্দিষ্ট কোন
আবাদি জমির দরকার হয় না। যেকোনো পরিত্যক্ত জায়গা, পতিত জমি বা বসতবাড়ির
আশেপাশে অব্যবহৃত স্থান, লবণাক্ত এলাকা, ক্ষারকীয় এলাকা, নতুন ফল বাগানের মধ্যে,
বাড়ির ছাদে বস্তায় আদা চাষ করে উৎপাদন বাড়ানো যেতে পারে।
প্রতিদিন বস্তায় আদা চাষ করলে উৎপাদন খরচ অনেক কম হয়, একই জায়গায় বারবার চাষ
করা যায়, কন্দ পঁচা রোগের আক্রমণ খুবই কম হয়। যদিও কোন বস্তায় কন্দ পঁচা রোগ
দেখা যায় তবে সে বস্তাটি সেখান থেকে সরিয়ে ফেলা যায় যেন অন্য বস্তায় এ রোগটি
আক্রমণ করতে না পারে। বস্তায় আদা চাষ স্থানভেদে বস্তা প্রতি ২৫ থেকে ৪০ টাকা
পর্যন্ত হতে পারে এবং প্রতিবছরে ১ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত আদা উৎপাদন করা
যায়।
নতুন মাটি দিয়ে বস্তা ভরাট করে সে বস্তায় যখন আদা চাষ করা হয় তখন সেখানে আগাছা
কম হয় আর অল্প কিছু আগাছা হলেও সেটি স্বল্প খরচে নিড়ানির মাধ্যমে পরিষ্কার করা
যায়। ফলে উৎপাদন খরচ কম হয়। বাংলাদেশের বাজারে আদার যথেষ্ট মূল্য রয়েছে এবং
যেহেতু আদা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় সেহেতু আমরা আমাদের পতিত জমি,বাড়ির
আঙ্গিনা ও অব্যবহৃত স্থান, বাড়ির ছাদ, ইত্যাদি স্থানে আদা চাষ করে আমাদের
পারিবারিক চাহিদা পূরণ এবং বিক্রি করেও কিছুটা আর্থিক মুনাফা লাভ করতে
পারি।
এইসব স্থানে বাণিজ্যিকভাবেও আদা চাষ করা যেতে পারে। যিনি পুকুরে মাছ চাষ
করেন তিনি তার পুকুর পাড়ে বস্তায় আদা চাষ করতে পারেন বাণিজ্যিকভাবে এবং এটি
লাভজনক হতে পারে।
বীজ আদা সংরক্ষণ পদ্ধতিঃ
বীজ আদা ছায়াযুক্ত স্থানে গর্ত করে সংরক্ষণ করা যায়। গর্তের নিচে এক ইঞ্চি
পরিমাণ বালু দিয়ে ভরাট করতে হবে এবং বালুর উপরে আদার বীজ রেখে মাটি দিয়ে ঢেকে
দিতে হবে। এর ফলে বীজ আদা শুকিয়ে যাবে না এবং শুকানোর ফলে এর ওজন কমে যাওয়ার
কোন সম্ভাবনা থাকবে না।
লেখকের মন্তব্যঃ
কৃষকদের স্বল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে বস্তায় আদা চাষ করে। অনেকে
যাদের নিজস্ব জমি নেই তারা বাড়ির আঙিনায় বা বাড়ির ছাদে, পতিত জমিতে আদা চাষ
করতে পারে। পারিবারিক চাহিদা পূরণের জন্য যে কেউ অতি অল্প খরচে বস্তায় আদা চাষ
করতে পারেন। বস্তায় আদা চাষ বাসার গৃহিনী রাও অনায়াসে করতে পারেন। এর ফলে একটা
পরিবারের পারিবারিক চাহিদা ও পূরণ হবে সাথে কিছুটা বাড়তি ইনকামেরও ব্যবস্থা হবে।
প্রিয় পাঠক, আধুনিক পদ্ধতিতে বস্তায় আদা চাষ কেন লাভজনক হতে পারে সে বিষয়টি
নিয়ে এখানে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা করেছি যদি আপনাদের এই পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তবে
পরিচিত সবার মাঝে শেয়ার করে দিবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url